ডিসেম্বর 6, 2025

অসময়ের তরমুজ চাষে বেল্লালের বাজিমাত

নভেম্বর 1, 2025

বিডিনিউজ ডেস্ক

অসময়ে তরমুজ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তরমুজ চাষি বেল্লাল।

বছর ছয়েক আগেও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নের এই চাষি অন্যের জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। পরিবারে বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ছিল তার টানাটানির সংসার। একার আয়ে সংসার চালানো ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। কিন্তু অসময়ে তরমুজ চাষ করে বাজিমাত করেছেন তিনি। ঘেরে মাছ চাষের পাশাপাশি অসময়ে তরমুজ চাষ করে তার ভাগ্য বদলেছে।


শুরুতে নিজের দুই বিঘা জমিতে তিনি তরমুজের চাষ শুরু করেন। লাভের মুখ দেখায় পরের বছর আরও কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষের ব্যপ্তি বাড়ান। দিন দিন আয় বাড়তে থাকে তার। তারপর অন্যেদের দেখাদেখি অফসিজনে তরমুজ চাষের সিদ্ধান্ত নেন। আরও কিছু জমি যুক্ত করে মাছের ঘের তৈরি করে চার পাড়ে মাচা করে শুরু করেন তরমুজ চাষ।

দেখা যায়, ঘেরের পাড়ে পানির ওপর বাঁশের খুঁটির ওপর নেট দিয়ে মাচা তৈরি করা। মাচায় ঝুলছে সারি সারি তরমুজ। প্রত্যেকটি তরমুজ নেটের ব্যাগে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুকুরে রয়েছে নানান জাতের দেশি মাছ। পথের পাশে লাগিয়েছেন করলা, পুঁইশাক, লাউসহ নানান জাতের সবজি।

বেল্লাল বলেন, অফসিজন তরমুজ চাষে পরিশ্রম তুলনামূলক কম। সিজনের তরমুজ বিলের ভিতর চাষ করায় পানি সেচ করতে হয়, যেটা ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। কিন্তু ঘেরের পাড়ে তরমুজে এই পানি সেচের কাজটা করা লাগে না।

তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ১ লাখ টাকারও বেশি তরমুজ বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। এ সিজনে অন্তত ৬ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হওয়ার প্রত্যাশা তার। ইতোমধ্যে দুই লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন।

তরমুজ চাষি বিল্লাল  বলেন, আগে শুধু মৌসুমে তরমুজ চাষ করতাম। এখন অফসিজন তরমুজ চাষ শুরু করেছি। প্রতিটা তরমুজ ৩.৫ কেজি থেকে ৬ কেজি পর্যন্ত হচ্ছে। সিজনের তরমুজ থেকে এখনকার তরমুজের স্বাদ অনেক বেশি। শহর থেকে পাইকাররা ক্ষেতে এসে ১৮০০-১৯০০ টাকা মণ দরে কিনে নিচ্ছে। এতে খরচ বাদ দিয়েও ভালো লাভ হচ্ছে।

বেল্লাল এখন সচ্ছল। তার ইচ্ছেগুলো পূরণ করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা তার। ছেলে মেয়েদের ভালো স্কুলে পড়াতে ভাবতে হবে না তাকে। বেল্লালের স্বপ্ন আগামী বছর তার ক্ষেতের পরিসর আরও বাড়াবে। বাড়বে আয়ও।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, খুলনার আবহাওয়া ও মাটি অফসিজন তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। জেলার সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষ হয় বটিয়াঘাটায়। এ বছর অফসিজন তরমুজ চাষে কৃষি অফিস থেকে সার, বীজসহ বালাই নাশক সরবারহ করা হয়েছে। বেল্লালের মত তরমুজ চাষিদের আমরা প্রশিক্ষণও দিচ্ছি। কৃষি অফিস কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

টপিক :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরো দেখুন