নিউজ ডেস্ক:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক একটা বোঝাপড়া না থাকলে তিক্ততা সৃষ্টি হবে। এজন্য দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়ার প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জতীয় প্রেস্কলাবে ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রে কাঁদা ছড়াছড়ি হবে। অনেক কথা আসবে। কিন্তু এটার একটা সীমা থাকা দরকার। তা না হলে একটা তিক্ততা সৃষ্টি হবে। যে তিক্ততা ভবিষ্যতের রাজনীতি আরো কলুষিত করবে। আমি আশা করব, আমরা আগামী দিনে একটা সুন্দর বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমরা নির্বাচনের মধ্যেমে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারে যাবো। জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ কাজগুলো করার চেষ্টা করবো। তারপর আবার জনগণের কাছে ফিরে যাবো, যদি তারা আমাদের গ্রহণ করেন আমরা আসব না হলে আসবো না। সবাইকে মতামতকে প্রকাশ করার সুযোগ দিতে হবে, সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে, একজন সাধারণ মানুষ যেন তার নায্য বিচার পায়।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে গোলামি থেকে মুক্তি পেয়েছি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ গোলামী থেকে। এরপর পাকিস্তানি গোলামী শুরু হয়। তারপরে আবার দেশে প্রভুদের গোলামী শুরু হয়। এই গোলামতেই আছি আমরা। গোলামদের কিন্তু একটা সংকীর্ণ মন তৈরি হয়। কিছুতেই খুব বেশি বড় করে দেখার সুযোগ হয় না। আমি মনে করি, আমাদের বড় করে দেখার চেষ্টা করা উচিত। আমরা মুক্ত সমাজ চাই। আমরা একটা মুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই।
অন্তর্বর্তী সরকার গত এক বছরেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের তালিকা তৈরি করতে না পারার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তারা এক বছরেও কি এদের খুঁজে পেলেন না? যারা এই দেশকে পরিবর্তনের জন্য প্রাণ দিলো।
গণঅভ্যুত্থানে আহত সাভারের একটি শিশুর কৃত্রিম মাথা লাগানোর বিষয় উল্লেখ করে কান্না জড়িত কণ্ঠে মহাসচিব বলেন, কালকে ৭ বছরে একটি শিশু এসে হঠাৎ করে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। শিশুটি বলেছে আমার মাথায় খুলিটা নেই, খুলিটা প্লাস্টিকের। প্লাস্টিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল খুলি তৈরি করে লাগিয়ে দিয়েছে এর চেয়ে বড় ত্যাগ আর কি হতে পারে?
রাষ্ট্র সংস্কারে একটি মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হওয়াকে ‘ইতিবাচক’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক বিষয়গুলো সমাধান করে দ্রুত নির্বাচনের একটা মোটামুটি ধারণা পাওয়া গেছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে আমাদের মধ্যেকার দ্বিধা কাটিয়ে একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারবো।
বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হওয়ায় মানবজমিন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদকে সম্মান দেয়া হয়। এদের মধ্যে মতিউর রহমান ও মাহমুদুর রহমানের হাতে ক্রেট তুলে দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ভুইয়াসহ কমিটির সদস্যরা। বাকিরা বিদেশে এবং অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেনি।